1. admin@bartomankagoj.com : admin :
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১৯ পূর্বাহ্ন

খুলনায় বৃদ্ধের হাতে ৫ বছরের শিশু ধর্ষণ-চেষ্টার অভিযোগ

বর্তমান কাগজ ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৫০ বার পঠিত

আবুল হাসনাত সজিব : খুলনায় চকলেটের প্রলোভনে বৃদ্ধের হাতে ৫ বছরের শিশু ধর্ষণের চেষ্টার শিকারের অভিযোগ উঠেছে। খুলনা মহানগরীর রূপসা স্ট্যান্ড সংলগ্ন ডাক্তার গলি এলাকায় সাড়ে ৫ বছর বয়সী নুরজাহান ফাতেমা নামের মেয়ের সাথে এঘটনা ঘটে। চকলেট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৭৫ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত মহরার আবু বক্কর কর্তৃক সাড়ে ৫ বছর বয়সী একটি নাবালক কন্যা শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগে জানা যায়। এ ঘটনায় শিশুর মা বাদি হয়ে অবসরপ্রাপ্ত মহরার আবুবকর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।

এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগি নুরজাহান এবিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন মাজিস্ট্রেট এর কাছে জবানবন্দী দেয়। জবানবন্দীতে সে বলে- সাড়ে ৫ বছর বয়সী শিশুটি বাসার সামনে খেলা করার সময় প্রতিবেশী অবসরপ্রাপ্ত মহরার মো. আবু বকর সিদ্দিক (৭৫) চকলেট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে রূপসা স্ট্যান্ড সংলগ্ন ডাক্তার গলির বাসায় ডেকে নিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে যৌনকামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে মেয়েটিকে খাটের উপর শুইয়ে হাত ধরে বলে- “বেশি কথা বলবা না, বেশি কথা বললে মেরে ফেলবো।” এমনকি সে শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টাও করে।

এক পর্যায়ে আবু বকরের নখের আঁচড়ে শিশুটির স্পর্শকাতর স্থানে ফোলা জখম হয়। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে তাকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদান করে। এমনকি এ ঘটনা কাউকে বললে তাকে হত্যা করার হুমকি দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয়। ওই সময় শিশুটি তার নিজ বাসায় চলে যায়। পরবর্তীতে শিশুটি ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে কাঁদতে শুরু করলে শিশুটির মা কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে ঘটনার বিস্তারিত জানায়।

পরবর্তীতে শিশুটির অভিভাবকেরা চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর শিশুটির মা বাদী হয়ে আবু বকর সিদ্দিককে (৭৫) আসামি করে খুলনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ৩৭, ধারা : ৯ (৪) (খ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০)।
এ ব্যাপারে নির্যাতিত শিশুটি কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, ‘মহুরি মুরব্বি আমাকে ব্যাথা দিয়েছে। শিশুটি আইনের কাছে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি দাবি করেছে। তার ভাষায়, আইন যেনো মুরব্বিকে বড় ধরনের শাস্তি দেয়’।

শিশুটির মা বলেন, আমার সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী মেয়েটি সেদিন বাইরে খেলাধুলা করছিল। সেই সময় অপরাধী খুলনা কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত মহরার আবুবকর সিদ্দিক চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে এই জঘন্য কাজটি করে। এতে মেয়েটি গুরুতরভাবে আহত হয়, রক্তক্ষরণ শুরু হয় এবং এখনো অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে। আমার মেয়ে এখনো স্কুলে যায় না, বাসায় বসেই পড়ালেখা করে। আমার স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন। ওইদিন রাতে মেয়েটার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেলে আমার মা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। দুই দিন ধরে চিকিৎসা চলে। পরে ৩০ তারিখ খুলনা সদর থানায় আমি মামলা করি। তিনি তার অভিযোগে আরও বলেন- এ অপরাধটি একটি অজামিনযোগ্য অপরাধ। কিন্তু আসামীর ছেলে ওকিল হওয়ায় তাকে অসুস্থ দেখিয়ে খুলনা বিজ্ঞ দায়রা জজ আদালত থেকে গ্রেফতার হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই জামির করিয়ে নেয়।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, জামিনের পর আসামি আবুবকর সিদ্দিকের ছেলে রুহুল আমিন আমাকে এবং আমার পরিবারকে মামলা উঠিয়ে নিতে রাস্তা-ঘাটে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। বলছে, ‘বিষয়টি নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করিস না, মামলা তুলে নে, না নিলে তোদের ক্ষতি হবে’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এটি পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য ও নিকৃষ্ট অপরাধ। আমি তার ফাঁসি চাই। আমার মেয়ের সঙ্গে যে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে, সেটি যেন আর কোনো শিশুর সঙ্গে না ঘটে এই প্রার্থনায় করছি’।

এবিষয়ে খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শিশু ধর্ষণের চেষ্টায় আসামি আবু বক্কার সিদ্দিককে গ্রেফতারের জন্য আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু আত্মগোপনে থাকার কারণে আটক করতে পারিনি। পরে আসামি আবুবকর আদালতে জামিন নিতে গিয়েছিলো। জামিন নিতে গেলে আদালত জামিন না মুঞ্জর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে।

এবিষয়ে আসামীপক্ষের আত্মীয় স্বজনরা বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি ও নগদ অর্থ লেনদেনে মাধ্যমে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগি পরিবার।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর